স্তন পান করাচ্ছেন এমন মায়েদের দই খাওয়ার গুরুত্ব
অনেক সময় দেখতে হয় যে বাবু জন্মের পর বাবুর মা আর আগের মত খেয়াল বা যত্ন পাচ্ছেন না। ব্যাপারটা দু:জনক তবে অনেক ক্ষেত্রেই সত্যি। আবার নতুন বাবুকে নিয়ে অতি মাতামাতির কারণে মায়ের দিকে অনিচ্ছাতেই হয়তো অতটা খেয়াল করা হয়ে ওঠে না। যে কারণেই ব্যাপারটা ঘটুক না কেন, এটা হতে দেয়া খুবই অনুচিত। কেননা মা সুস্থ না থাকলে বাচ্চাও সুস্থ থাকবে না, সঠিক যত্ন পাবে না। কাজেই স্তন পান করাচ্ছেন এমন নতুন মায়েদের শারীরিক যত্নের কোন বিকল্প নেই।
শারীরিক যত্নের কথা উঠলেই প্রথমে আসবে খাবারের কথা। কেননা খাবারের সাথে নিবিড় সম্পর্ক আছে সুস্থতার। সুষম খাবারের পাশাপাশি মায়েদের যত্নে আজ এমন একটা খাবারের কথা বলব যা এক কথায় একটা সুপারফুড। এটা একসাথে আপনাকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দেয়, ইনফেকশন থেকে বাচায়, ক্ষয় পূরণ করে এবং দুধের যোগান দেয়। এই সুস্বাদু, সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী খাবারটার নাম হল দই।
আসুন জেনে নিই কিভাবে এটা একজন নতুন মায়ের নানা উপকার করতে পারে।
১. দইয়ে রয়েছে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়াম নতুন মায়ের হাড় ও দাতের যত্নে অনন্য। তাছাড়া মায়ের দুধের মধ্য দিয়ে এটা বাচ্চাকেও মজবুত দাত দেয়। গর্ভাবস্থায় হাড় ও দাতের যে ক্ষতি হয়েছে নিয়ম করে দই খেলে এর সবটাই কাটিয়ে ওঠা যাবে।
২. দুধে রয়েছে উচ্চ মাত্রার এমাইনো এসিড ও প্রোটিন। গর্ভাবস্থায় বেশ ধকল যায় মায়ের শরীরের ওপরে। এ সময়ে যে শারীরিক ক্ষয় হয়েছে সেটা পূরণ করতে এই প্রোটিনের ভূমিকা অসামান্য। দেহের পেশীর ঘাটতি মেটাতে এবং অতিরিক্ত মুটিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করবে দইয়ের এই উপাদানগুলো।
৩. বাচ্চার সাথে স্যাতস্যাতে যায়গায় থাকা, বাচ্চাকে বারবার সাফ করানো, এক জায়গায় অনেক্ক্ষণ ধরে অবস্থানের কারণে অনেক মায়েদের নানারকম ইনফেকশন বা সংক্রমণ দেখা দেয়। দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিক এর কল্যাণে কোন ইনফেকশন হতে পারে না। ফলে মা ও শিশু থাকে নিরাপদ।
৪. দই এ থাকা ভিটামিন বি এবং প্রোবায়োটিক মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটা বৃদ্ধি করতে সক্ষম। এর ফলে সহজেই নতুন মা কোন ব্যাধিতে আক্রান্ত হবেন না যদি তিনি নিয়মিত দই খান।
৫. বাচ্চা জন্ম দেয়ার পরে অনেক মায়ের নানা রকম খাবারে অরুচি দেখা দেয়। খেয়ে কিছু হজম করতে পারে না। দই খেলে এ সমস্যার সমাধান হবে খুব চমৎকারভাবে। দই এর মধ্যে থাকা প্রোবায়োটিক আমাদের অন্ত্রের কাজ খুব ভালভাবে করতে সাহায্য করে৷ এর ফলে খাবার হজম হয় খুব ভালোভাবে এবং দই খেলে বুক জ্বালাপোড়া ভাব থাকলে সেটাও কেটে যায় ও অরুচির সমস্যাও দূর হয়ে যায়।
তবে মনে রাখা দরকার যে, খুব ভাল উপকার পেতে চাইলে কিন্তু দই খেতে হবে নিয়ম করে। একটা সময় ধরে খেলে তবেই মিলবে উপকার।
কাজেই ভাল মানের দই কিনে খাওয়ার চেষ্টা করা উচিত যাতে খেতেও ভাল লাগে আবার পুষ্টিও পাওয়া যায় ষোল আনা।
সন্তানের সঠিক বিকাশে একজন সুস্থ মায়ের অনন্য ভূমিকা রয়েছে৷ কাজেই মায়ের সুস্থতা এবং পুষ্টি নিশ্চিত করবার কোন বিকল্প নেই। হোক শ্বশুরবাড়ি বা বাবার বাড়ি নতুন মায়ের যত্ন নিয়ে হোক কাড়াকাড়ি।
শুভেচ্ছা।
Leave a Reply
Want to join the discussion?Feel free to contribute!